কক্সবাজার প্রতিনিধি: সমুদ্রপথে ফের মানবপাচারের চেষ্টাকালে বঙ্গোপসাগরের সেন্টমার্টিন দ্বীপ থেকে ছয় দালালসহ ৩৯ রোহিঙ্গাকে আটক করেছে কোস্টগার্ড। বুধবার বিকেলে ট্রলারসহ তাদের আটক করা হয়। এর আগেরদিন টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ সৈকত থেকে ১৪ নারী-পুরুষকে উদ্ধার করে বিজিবি। এদের মধ্যে পাঁচজন রোহিঙ্গা তরুণীও ছিলেন। এ নিয়ে দুদিনে মোট ৫৩ রোহিঙ্গাকে আটক করা হলো। উদ্ধার রোহিঙ্গারা উখিয়া-টেকনাফে অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা।
কোস্টগার্ড টেকনাফ স্টেশনের কমান্ডার লে. ফয়েজুল ইসলাম মন্ডল বলেন, বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর থেকে একটি ট্রলার থেকে ছয় দালালসহ ৩৯ রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১০ জন নারী, ১৪ জন পুরুষ ও ৯ জন শিশু রয়েছে।
এদিকে গত বছরের আগস্ট মাসের পর থেকে মিয়ানমারে হত্যা, নির্যাতন ও বাড়িঘরে আগুনের ঘটনায় প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে আট লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। এছাড়া আগে থেকে রয়েছে প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা। সব মিলিয়ে ১২ লাখের মতো রোহিঙ্গার বসবাস বাংলাদেশে। হঠাৎ করে আবার টেকনাফ উপকূল দিয়ে সাগরপথে মানবপাচারের চেষ্টা করা হচ্ছে। মালয়েশিয়ায় পাচারের নামে একটি প্রতারকচক্র বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রলোভনে পাচারের ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
২০০৭ সালে টেকনাফের উপকূল ব্যবহার করে সাগরপথে মানবপাচার শুরু হয়েছিল। এরপর স্থানীয় ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের অর্থের লোভে ফেলে হাজার হাজার লোকজনকে সাগরপথে ট্রলারযোগে মালয়েশিয়া পাচার করা হয়। তবে কিছু লোক পৌঁছলেও অনেক লোক এখনো নিখোঁজ রয়েছে। সাগরপথে পাচার হতে যাওয়া এমন অনেক পরিবার এখনো শোকে কাতর।
সাগরপথে মানবপাচার রোধে সরকার কঠোরতা ঘোষণা করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালের ৮ মে টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি মো. আতাউর রহমান খন্দকারের নেতৃত্বে পুলিশ পাচারকারীদের আটকে অভিযান চালায়। ওই সময় পাচারকারীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ধলু হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম ও জাফর আলম নামে তিন শীর্ষ মানবপাচারকারী নিহত হয়। এরপর থেকে মানবপাচারকারীরা আত্মগোপনে চলে যায়। পরবর্তীতে উপকূল দিয়ে সাগরপথে মানবপাচার একপ্রকার বন্ধ হয়ে যায়।